শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের উত্তরাখণ্ডে তুষার ধসে তীব্র জলোচ্ছ্বাসে ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্প ভেসে গেছে। ভয়াবহ তুষারধসের ঘটনায় ১৪ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ১৭৪ জনের বেশি নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এই ঘটনায় এক থেকে দেড়শ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন মুখ্যসচিব ওম প্রকাশ।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ প্রকল্পের আড়াই কিলোমিটারের টানেল কাদা পাথরে অবরুদ্ধ। ভেঙে গিয়েছে ৫টি সেতু। কার্যত, ১৩ টি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছে সেনা ও নৌবাহিনী।
ধস নামার পরেই আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে ভাগীরথীর গতিপথ রুদ্ধ করা হয়। সেজন্য খালি করে দেয়া হয়েছে শ্রীনগর ও ঋষিকেশ বাঁধ। জলের স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে গেছে জোশীমঠের মালারি অঞ্চলে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনের তৈরি এক সেতু।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটে সবার নিরাপদে থাকার প্রার্থনা করেছেন। পরিস্থিতির দিকে তিনি নজর রাখছেন বলেও জানান। অমিত শাহ উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। দুর্ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে টুইট করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও। টুইটারে তিনি লেখেন, আমি নিশ্চিত উদ্ধারকার্য ও ত্রাণকার্য ভালোভাবেই চলছে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত ঘোষণা করেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও যাদের পরিবারের সদস্য মারা গিয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪ লাখ টাকা করে দেয়া হবে।
বিচ্ছিন্ন গ্রামগুলোতে হেলিকপ্টার করে ফেলা হচ্ছে খাবার। পানি ও বিদ্যুতহীন হয়ে পড়েছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। স্নাইপার কুকুর দিয়ে ধ্বংসস্তূপে প্রাণের খোঁজ করা হচ্ছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বোরিস জনসন জানিয়েছেন, উত্তরাখণ্ডের এই দুর্যোগে ভারতে যদি কোনো সহায়তার প্রয়োজন হয় তাহলে তারা প্রস্তুত।
একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, সুরঙ্গ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একজনকে। তিনি বেঁচে ছিলেন। তাঁকে বের করার পর আনন্দে উল্লাস দেখাতে শুরু করেন উদ্ধারকারী দল। ওই ব্যক্তিও দু হাত উপরে তুলে বেঁচে থাকার আনন্দে চিৎকার করতে থাকেন। জি নিউজ জানিয়েছে, ১৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার মেঘভাঙা বৃষ্টিতে হিমবাহ ভেঙে আছড়ে পড়ে উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায়। যেখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে অলকানন্দা ও ধৌলিগঙ্গা নদী। এই নদীতে জলের স্রোত বেড়ে যায়। হুড়মুড়িয়ে এগিয়ে আসে জল-পাথর-বরফ। সংলগ্ন এলাকা ভেঙে গুড়িয়ে নিয়ে যায় তীব্র জলোচ্ছ্বাস। রেইনি গ্রামে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মীরা সেই ভয়ঙ্কর বেগে ছুটে আসা জলের গ্রাসে পড়েন। সেই শ্রমিকদের খোঁজ চলছে।